ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল–নাসিরনগর লাখাই সড়কের ধর্মতীর্থ হাওর এলাকায় ছিনতাইকারীর হাতে গুরুতর আহত হয়ে পরবর্তীতে দু’দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে পাড়ি দেন ৭ সন্তানের জনক অটোরিকশা চালক আব্বাস আলী।
গত মাসের (২৩ ই মার্চ) ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা নিয়ে জীবিকার তাগিদে বের হয়ে অটোরিকশা ছিনতাইকারীর কবলে পরে লাশ হয়ে ফিরতে হয় তাকে। নিহত আব্বাস আলী সরাইল উপজেলা সদর ইউনিয়নের সৈয়দটুলা পশ্চিম পাড়া (বন্দের বাড়ি) এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
এদিকে আব্বাস আলী’র মৃত্যুর পর একমাত্র উপার্জন কারীকে হারিয়ে অভাব অনটনে দিন পাড় করছে ৭ সন্তান ও তার স্ত্রী। স্থানীয়দের প্রাথমিক সহযোগিতা’য় কোনোমতে এই ক’দিন চললেও অনিশ্চিত তাদের আগামী। নিজের জীবনসঙ্গী’কে হারিয়ে ভারসাম্যহীন মানুষের মতো স্তব্ধ তার স্ত্রী। শিশু সন্তানদের চোখে মুখে আজও কান্নার ছাপ।
তবে মানবিক দৃষ্টিকোণ ও দায়িত্ববোধ থেকে হতদরিদ্র ও অসহায় এ পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রিয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তারুণ্যের সরাইল।
শনিবার (২০ ই এপ্রিল) সংগঠনটির উপদেষ্টা মোঃ পাভেল মিয়া’র নেতৃত্বে একদল সদস্য সরেজমিনে দেখতে যায় আব্বাস আলী’র পরিবারের বর্তমান অবস্থা, কথা বলেন স্থানীয়দের সাথেও।
পরিদর্শন ও খোঁজ খবর নেওয়া শেষে পুবের আলোকে পাভেল মিয়া বলেন, আব্বাস আলী’র মৃত্যু অপ্রত্যাশিত ও বেদনার। এই পরিবারটি উনাদের একমাত্র উপার্জন কারীকে শুধু হারায় নি ৭ টি সন্তান হারালো তাদের বাবাকে এবং একজন নারী হারালো স্বামীকে। এই শূণ্যতা পূরণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তবে দেশ ও প্রবাসের মানবিক মানুষদের সহযোগিতা’য় এই পরিবারটিকে কিভাবে স্বাবলম্বী করা যায় সেই চেষ্টায় আমরা তারুণ্যের সরাইল করব ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার ভাই আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আব্বাস আলী’র ৭ টি সন্তান ই অল্প বয়সের। যে ব্যবস্থা’য় পরিবারটি আগামীতে অন্তত জীবন যাপনের জন্যে কারো কাছে হাত পাততে হবে না সেই পদক্ষেপ ই গ্রহণ করব আমরা।
আব্বাস আলী’র মৃত্যুর পর পরিবারটি অভাব অনটনে দিন পাড় করছে জানিয়ে স্থানীয় অনেকে বলেন, আব্বাস আলী একজন নিম্ন আয়ের মানুষ ছিলেন। দিনে এনে দিনে খেতেন। এই পরিবারটির পাশে সকলেই সাধ্য অনুযায়ী থাকলে ছোট্ট ৭ টি এতিম বাচ্চা ভালোভাবে চলতে পারবে।
এ বিষয়ে সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, আব্বাস আলী’র মৃত্যুর পর তার পরিবারটি অতি কষ্টে দিন পার করছে। তিনি অটোরিকশা চালিয়ে সংসার টা চালাত। তারুণ্যের সরাইল যে এই পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়ে তাদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব এবং চেয়ারম্যান হিসাবে সকলের প্রতি আহ্বান জানাই আপনারা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী এ পরিবারটির পাশে দাঁড়ান।